দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কোভিড-১৯ নামক অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে বিশ্বের মানুষ এবং বিশ্বজুড়ে সব সেক্টরেই কঠোরভাবে আঘাত করেছে এ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। আক্রান্ত হওয়ার পর যারা বেঁচে আছেন, তারাও নানা শারীরিক দুর্বলতায় ভূগছেন। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হচ্ছে আজ। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস প্রতিবছর ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়, এর কারণ হচ্ছে জাতিসংঘের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’-এর জন্মদিন ৭ এপ্রিল ১৯৪৮।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠার ২ মাস পর ২৪ জুন ১৯৪৮ সালে এ সংস্থার প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল জেনেভায়। সেই সময় সারা বিশ্বের ৪৬টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেই সম্মেলন থেকেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরিতে ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে প্রতি বছর নিয়মিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সুরক্ষিত বিশ্ব, নিশ্চিত স্বাস্থ্য’। দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে সকলের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার নানামুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে।

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বৈশ্বিক অঙ্গীকারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবার সকল স্তরে এসব সেবাকে জনগণের জন্য আরো সহজলভ্য ও গ্রহণযোগ্য করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই করোনাকে সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তবে একথা সত্য, তার নিরলস পরিশ্রম ও অদম্য মনোবলের কারণে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের আগেই করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ইতিবাচক সাফল্য অর্জন করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা প্রায় ৩৪ কোটি, যেখানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা মাত্র ১৭ কোটি। কোভিড-১৯-এর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ৯ লাখ মানুষ, সেখানে বাংলাদেশে মারা গেছে ২৯ হাজার। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানটি আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১ টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও দেশের সব জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্বাবধানে স্থানীয় পর্যায়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।